ছাত্র-জনতা হত্যার ঘটনায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে দ্রুত আলামত সংগ্রহ করার অনুরোধ করেছেন গুলশান থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল হক।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে শুনানির শেষ পর্যায়ে তিনি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আদালতের কাছে ৩০ সেকেন্ড সময় প্রার্থনা করেন। পরে আদালত সময় দিলে তিনি বলেন, আমার এলাকায় কোনো গুলির ঘটনা ঘটেনি। যার সিসিটিভি ফুটেজ সেই এলাকায় সংরক্ষিত রয়েছে।
শুনানির শেষ পর্যায়ে ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে হাত উঁচু করে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মাজহারুল হক। এসময় তিনি বলেন, ‘মাননীয় আদালত আমাকে ৩০ সেকেন্ড সময় দিন। এটি যদি আমি না বলতে পারি তাহলে আমি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হব’। আদালত সম্মতি দিলে সাবেক এ ওসি বলেন, ‘ওইদিন আমার থানা থেকে একটি গুলিও করা হয়নি। সেখানে র্যাব, বিজিবি ও এপিবিএন ছিল। গুলশান আবাসিক এলাকায় ৫০ কোটি টাকা খরচ করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। সেসব ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করলেই সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে।’
তার এ কথা শুনে আদালত বলেন, আমরা এখন এসব কথা শুনছি না। এগুলো পরে বলবেন। পরে আপনাদের এসব কথা শোনা হবে।
এসময় ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম আদালতকে অনুরোধ করেন যেন তার কথা শেষ করতে দেওয়া হয়।
পরে আদালত আবার অনুমতি দিলে গুলশান থানার সাবেক ওসি মাজহারুল বলেন, ‘আমি আশঙ্কা করছি এসব আলামত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আমি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের জন্য আবেদন করছি। না হলে আমি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হতে পারি’।
তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে আদালত উপস্থিত প্রসিকিউশনকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
এর আগে সকাল পৌনে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে জুলাই-আগস্টে গণহত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার আট কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
তারা হলেন– সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান, ঢাকা জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল কাফি, মিরপুর ডিএমপির সাবেক ডিসি মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা, ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুর ইসলাম, গুলশান থানার সাবেক ওসি মাজহারুল হক, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান এবং ঢাকা উত্তর ডিবির সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন।