ম্যানচেস্টার সিটি ১ – ২ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
ম্যানচেস্টার ইজ রেড। আগামী কদিনের জন্য ম্যানচেস্টার শহরের রংটা লালই থাকলো। পেপ গার্দিওলার দুর্দশা কাটলো না বিগ ম্যাচে এসেও। ১৯৫তম ম্যানচেস্টার ডার্বির শেষটা হলো রেড ডেভিলদের জয়ে। শেষ ১১ ম্যাচে ম্যানসিটির হার ৮ ম্যাচে। জয় কেবল ১টিতে। রুবেন আমোরিম স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের পর প্রথম ম্যান ইউনাইটেড কোচ হিসেবে নিজের প্রথম ডার্বি ম্যাচেই পেলেন জয়ের দেখা।
যদিও ২-১ গোলের জয়ে ইউনাইটেড নিজেদের জয়টা মূলত পেয়েছে ম্যানসিটির অবিশ্বাস্য ভুল আর শেষ তিন মিনিটের ঝড়ে। মিডফিল্ডার ম্যাথিউস নুনেজের অবিশ্বাস্য ভুলে বল পেয়ে গিয়েছিলেন আমাদ দিয়ালো। তাকে আটকাতে ফাউল করে ইউনাইটেডকে ৮৮ মিনিটে ম্যাচে ফেরার উপলক্ষ্য করে দেন নুনেজ নিজেই।
আর ৯০ মিনিটে আমাদ দিয়ালো আরও একবার বল জড়িয়েছেন সিটিজেন্সদের জালে। যেটা তাদেরকে এনে দিয়েছে ডার্বি ম্যাচে জয়ের স্বাদ। বৃথা গেল ম্যানসিটি ডিফেন্ডার ইয়াস্কো গার্ভাদিওলের ৩৬ মিনিটে করা গোল।
ম্যাচের শুরুতেই চমক দেখা গেল একাদশে। রুবেন আমোরিম শুরুর একাদশে রাখেননি আলেহান্দ্রো গার্নাচো কিংবা মার্কাস রাশফোর্ডকে। তবু সিটির ঘরের মাঠে দাপটে শুরু করেছিল ইউনাইটেডই। বলের নিয়ন্ত্রণ ছিল তাদেরই পায়ে। গেম বিল্ডআপে আমোরিমের কোচিং দর্শন আরও একবার টের পাওয়া গেল এই ম্যাচে। সিটি সে সময় রক্ষণ সামলানোর দিকেই মন দিয়েছিল। কিন্তু শুরুর সেই দাপট সামলে মাঝমাঠের খেলা সিটি নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে সময় নেয়নি।
যদিও বল পায়ে রাখার পরেও ইউনাইটেড ডিবক্সে হালান্ডের নিষ্প্রভ পারফরম্যান্স খানিক হতাশই করেছিল সিটিজেন্সদের। দু’-একটি সুযোগ ছাড়া কোনও দলই বিপক্ষের বক্সে হানা দিতে পারেনি। সিটির গোলটাও অনেকটা খেলার ধারার বিপরীতেই বলতে হয়। কর্নার থেকে একটা ছোট ওয়ান-টু-ওয়ান করে বক্সে বল ফেলেছিলেন ডি ব্রুইনা। সেখান থেকেই হেডে গোল করেন গাভার্দিওল।
দ্বিতীয়ার্ধে সেই তুলনায় লড়াই হয়েছে চোখে চোখ রেখে। বলের পজেশন ছিল সমানে সমান। তবে আক্রমণভাগে সিটিজেন্সদের দূর্বলতা ধরা পড়ল প্রবলভাবে। পুরো অর্ধে ৩ শটের একটাও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি সিটি। আর্লিং হালান্ড আরও একটা বিগ ম্যাচে হলেন সুপার ফ্লপ। তাকে আটকে রাখার কাজটা ভালোভাবেই করেছিলেন আর্জেন্টাইন তারকা লিসান্দ্রো মার্টিনেজ।
বিপরীতে ইউনাইটেডের গেম বিল্ডআপে ভয় ধরিয়েছিলেন আমাদ দিয়ালো। একাধিকবার নিজে শট নিয়েছেন। সতীর্থদের সঙ্গে বোঝাপড়ায় ছিলেন দারুণ। তবু সমতাসূচক গোল আসেনি ৮৭ মিনিট পর্যন্ত। নুনেজের ফাউলের হয়েছিলেন দিয়ালো। রেফারি বাঁশি বাজান পেনাল্টির। স্পটকিকে গোল করে ম্যাচে সমতা আনেন ব্রুনো ফার্নান্দেজ।
মিনিট দুয়েক পর লিসান্দ্রো মার্টিনেজের লম্বা পাস আলতো টোকায় চিপ করেন আমাদ দিয়ালো। তাতে পরাস্ত হন এগিয়ে আসা সিটি গোলরক্ষক এদেরসন। দূরহ কোণ থেকে বল ফাঁকা পোস্টে পাঠান আইভোরিকোস্টের তরুণ ফরোয়ার্ড। তাতেই জয় নিশ্চিত হয় ইউনাইটেডের জন্য।
এই ম্যাচের পর এক ম্যাচ বেশি খেলে লিগ শীর্ষে থাকা লিভারপুলের থেকে নয় পয়েন্টে পিছিয়ে পড়ল সিটি। ১৬ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ নম্বরে তারা। পরের ম্যাচ লিগে ছয়ে থাকা অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে। সেই ম্যাচে হারলে সিটিজেন্সদের নেমে যেতে হবে ছয়ে। টানা পাঁচ বার লিগ জয়ের আশা কার্যত শেষ গার্দিওলার শিষ্যদের। অন্যদিকে ১৬ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে ১২ নম্বরে ম্যান ইউনাইটেড।