দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপ বন্ধসহ ভারতীয় গণমাধ্যমে অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিংসাত্মক তথ্য প্রচার বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে পেনিনসুলা ডায়ালগ অ্যান্ড জুলাই ৩৬ ফোরাম।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফোরামের আহ্বায়ক নাজির শাহিন, সদস্য সচিব নাওয়িদ হোসেন, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মারুফ হাসান, এস এম শহীদুজ্জামান লিমন, মো. নাজমুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তব্যে ফোরামের আহ্বায়ক নাজির শাহিন বলেন, উপমহাদেশের দীর্ঘদিনের ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আস্থাহীনতা দূর করে শক্তিশালী আঞ্চলিক ফোরাম হিসেবে সার্ককে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ ও যৌক্তিক পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে গড়ে তুলতে হবে।
এসময় বেশ কয়েকটি দাবি উপস্থাপন করা হয়। সেগুলো হলো-
১। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে।
২। ভারতীয় গণমাধ্যমে অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিংসাত্মক তথ্য প্রচার বন্ধ করতে হবে।
৩। ভ্রাতৃপ্রতীম প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে সমতা ও পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।
৪। যৌথ নদীগুলোর পানি বণ্টন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ইত্যাদি ইস্যুতে ন্যায্যতার ভিত্তিতে যৌক্তিক সমাধান খুঁজে বের করা।
৫। সংখ্যালঘু ইস্যুতে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা ও উসকানিমূলক প্রচার বন্ধ করা।
৬। জুলাই বিপ্লবে মানবতাবিরোধী অপরাধে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য জড়িতদের আশ্রয়-প্রশ্রয় না দিয়ে তাদেরকে কি প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে হস্তান্তর করা হবে তার একটি সুস্পষ্ট রূপরেখা দেওয়া।
৭। সীমান্তে অবৈধ ও অযাচিত হত্যা বন্ধ করা এবং যৌথ প্রচেষ্টায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা।
৮। বাংলাদেশে ওয়ার্ক পারমিটবিহীন অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়া এবং বৈধভাবে কর্মরতদের ট্যাক্সের আওতায় আনা।
৯। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তান কর্তৃক সংঘটিত মানবতাবিরোধী গণহত্যা, নারী ধর্ষণ, শিশু হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা।
১০। পাকিস্তানের কাছ থেকে সব বকেয়া পাওনা আদায়ের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
১১। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ঘাপটি মেরে থাকা পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের চিহ্নিত করে চাকরিচ্যুত করা।
১২। সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রেখে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।
১৩। উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে স্বচ্ছ জবাবদিহিতার মাধ্যমে সর্বস্তরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।
১৪। বেকারত্ব দূরীকরণে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা।
১৫। প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে সার্ককে আঞ্চলিক, ব্যবসায়িক, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা।
১৬। ভারতসহ অন্যান্য দেশে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাস ও অন্যান্য স্থাপনার যথাযথ নিরাপত্তা বিধান করা।