ভ্রমণ-সফর মানুষের জীবনের সঙ্গে জরিয়ে আছে প্রতি মুহূর্তে। জরুরি প্রয়োজন, স্বাভাবিক জীবনযাপন, বিশেষ আনন্দ ভ্রমণের জন্য মানুষ সফরে বের হয়ে থাকেন। মোটকথা প্রতি মুহূর্তেই সফর করতে হয় মানুষকে।
সফর ও ভ্রমণের মুহূর্ত মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনে ব্যাঘাত ঘটায়। দৈনন্দিন জীবনের রুটিনে পরিবর্তন আনে। ভ্রমণ সুখকর করতে আগে থেকেই পরিকল্পনা প্রয়োজন। এতে নতুন জায়গার ঝামেলা এড়ানো সম্ভব। যে কাজ বা উদ্দেশ্য নিয়ে ভ্রমণে বের হয়েছেন তা সহজেই করা সম্ভব।
সফর ও ভ্রমণে মানুষের যে কষ্ট হয় তা নিয়ে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, সফর হলো শাস্তির অংশ। তা তোমাদের কাউকে (অর্থাৎ সফরকারীকে) পানাহার ও নিদ্রায় বিঘ্ন সৃষ্টি করে। সুতরাং তোমাদের সফরের কাজ সমাপ্ত হয়ে গেলেই সে যেন তাড়াতাড়ি তার পরিবারের কাছে ফিরে যায়।(বুখারি ও মুসলিম)
অর্থাৎ এই হাদিসে মাধ্যমে বুঝানো হয়েছে, সফরে যানবাহনে আরোহণ ও পায়ে চলার কারণে অভ্যাসগত অনেক কিছুই ত্যাগ করতে হয়। সফরে কষ্ট, ক্লান্তি, অতি গরম ও অতি ঠাণ্ডা, ভয়-ভীতি, পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধব থেকে বিচ্ছিন্নতা এবং নিরানন্দ জীবন। মুসাফির সর্বদা তার লক্ষ্য অর্জনে ব্যস্ত থাকে। সে স্বাভাবিকের মতো পানাহার, ঘুম ও বিশ্রাম নিতে পারে না।
স্বাভাবিক জীবনের গতি পরিবর্তন করে দেয় ভ্রমণ তাই এ সময় ইসলামী বিধানেও কিছুটা শিথিলতা রাখা হয়েছে। নামাজ চার রাকাতের পরিবর্তে দুই রাকাত পড়ার বিধান রাখা হয়েছে। কোরবানি, রোজার ক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়া হয়েছে।
সফরে কষ্ট থাকলেও মুসাফিরের (ভ্রমণকারী) জন্য আল্লাহ তায়ালা বিশেষ পুরস্কার হিসেবে দোয়া কবুলের সুসংবাদ দিয়েছেন। এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া অবশ্যই কবুল করা হয়, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আর তারা হলেন- নির্যাতিত (মজলুম) ব্যক্তির দোয়া, মুসাফিরের দোয়া আর সন্তানের প্রতি বাবার বদ-দোয়া। (তিরমিজি)