ফোন বা কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ ঘটাতে ডাটা কিংবা ব্রডব্যান্ড কানেকশনের জন্য টাকা খরচ করতেই হয়। কখনো কখনো বাজেটের বাইরেও অনেকটা বেশি খরচ হয়ে যায় ইন্টারনেটের পেছনে। তবে বিশ্বে এমন একটি দেশ রয়েছে যে দেশের নাগরিকদের ইন্টারনেট খরচ নিয়ে ভাবতে হয় না। বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পায় সবাই। এমনকি দেশটির রাজধানীতে পাবলিক ট্রান্সপোর্টও ফ্রি করে দেওয়া হয়েছে জনগণের জন্য।
দেশটির নাম এস্তোনিয়া। ইউরোপের ছোট্ট এই দেশটির রাজধানীর নাম তাল্লিন। এদেশে মানুষকে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে এক পয়সাও খরচ করতে হয় না। সেখানকার সব বাসা বাড়ি, ক্যাফে, রেস্তোরাঁ, পেট্রোল পাম্প, স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় সব জায়গায় ইন্টারনেট ফ্রি ব্যবহার করা যায়। দেশের সরকার বহন করে সকল ইন্টারনেট খরচ। অবশ্য দেশটিতে সবকিছুই হয় ইন্টারনেটে। ফলে নিঃসন্দেহে দেশটির নাগরিকদের মাসে অনেক খরচ বেঁচে যায়। এস্তোনিয়াতে ২০০০ সালে ইন্টারনেট চালু হয়। এরপর পৃথিবীর মধ্যে প্রথম ই-কান্ট্রি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে দেশটি।
আমেরিকার বেসরকারি সংস্থা ‘ফ্রিডম হাউস’ এর প্রতিবেদনে জানা যায়, সারাবিশ্বে বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে এস্তোনিয়া একটি মডেল দেশ। বিনামূল্যে ইন্টারনেট ছাড়াও, আরো অনেক জিনিস রয়েছে যা এই দেশটিকে বিশেষ করে তোলে। এস্তোনিয়ার অর্থনৈতিক মন্ত্রণালয়ের লক্ষ্য ছিল প্রতিটি নাগরিককে ডিজিটাল সেবায় অন্তর্ভুক্ত করা। সেজন্য সারাদেশে ৩ হাজারের বেশি ফ্রি ওয়াই-ফাই স্পট চালু করা হয়। এমনকি অনলাইনেই নির্বাচনে ভোটদানের সুযোগও তৈরি হয় যাতে ঘরে বসেই নাগরিকরা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন।
১৯৯১ সালে এই দেশটি রাশিয়া থেকে পৃথক হযওয়ার পর অর্থনীতিতে দ্রুত উন্নতি করে। এখানে শুধু ইন্টারনেটই বিনামূল্যে নয়, এখানকার মানুষ পাবলিক ট্রান্সপোর্টও পান বিনামূল্যে। ২০১৩ সালে দেশটির রাজধানীতে তৎকালীন মেয়র বিনামূল্যে পাবলিক ট্রান্সপোর্টের পরিষেবা চালু করেন। মুক্তমত কিংবা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার ক্ষেত্রেও দেশটি পৃথিবী সেরা। যে কোনো ধরনের মতামত জানানোর সুযোগ রয়েছে।
এছাড়া বিশুদ্ধ বাতাসের জন্য এস্তোনিয়া বেশ পরিচিত দেশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, এস্তোনিয়া এমন কয়েকটি দেশের মধ্যে রয়েছে যেখানে বায়ুর মান সবচেয়ে ভালো।